সালাত কায়েম করুন - সালাত সম্পর্কিত বই | Salat Kayem Korun : Shaikh Abu Abdil Aziz Munir Al-Jajairi

  • বই : সালাত কায়েম করুন
  • লেখক : শাইখ আবু আব্দিল আজিজ মুনির আল-জাযাইরি
  • প্রকাশনী : পথিক প্রকাশন
  • বিষয় : সালাত/নামায
  • অনুবাদক : মুফতি হেলালুদ্দীন কাসেমি
  • পৃষ্ঠা : 104, কভার : হার্ড কভার
  • ভাষা : বাংলা
أقم الصلاة"
সালাত কায়েম করো"

এটি প্রজ্ঞাবান লুকমানের উপদেশ, মহিমান্বিত কুরআনে যা চিরস্থায়ীভাবে লিখে রাখা হয়েছে।

এটি এমন এক বিশিষ্ট মনীষীর উপদেশ, যাকে মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন হিকমত দান করেছিলেন।

এটি নসীহত, একজন পিতার পক্ষ থেকে তার পুত্রকে – কোমল ভাষায় এবং সুন্দর শব্দমালায়; এমন হৃদয় হতে যে শুধু মমতা ও ভালোবাসা ছড়ায় এবং এমন মুখ হতে যে শুধু মধু ঝরায়।

যেন এটি প্রতীক ও আদর্শ হয় আমাদের জীবন চলার পথে; তার জন্যও, যে তার সন্তানদের কল্যাণ ও মুক্তির আকাঙ্ক্ষা করে।

কোনো কোনো সন্তানের বয়ঃসন্ধিকাল ও বালেগ হওয়ার সময় কাল বিভিন্ন কারণে বিলম্বিত হয়। তাই ঐ সময়কালের অপেক্ষায় না থেকে শৈশবকাল থেকেই তার কচি মনে এঁকে দিতে হবে সালাতের গুরুত্ব ও মহত্ত্ব। তার পবিত্র অন্তরে গেঁথে দিতে হবে দাসত্বের মহিমা। দাসত্বের মহিমা উপলব্ধি করার অতি ফজিলতপূর্ণ এই ইবাদাতকে তার শিশু মনে মোহরাঙ্কিত করে দিতে হবে। মহান সৃষ্টিকর্তার দাসত্ব ও আনুগত্যে অভ্যস্ত করে গড়ে তুলতে হবে তাকে ছোটোবেলা থেকেই। কারণ, আজকে যে শিশু, আগামীকাল সে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ।

আপনি তো সন্তানের প্রতি আপনার মায়া-মমতা ততদিনই প্রকাশ করতে পারবেন, যতদিন এ ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় আপনি বেঁচে থাকবেন। সুতরাং, হে কল্যাণকামী, সৎ ও যোগ্য পিতা! আপনি নিজ সন্তানকে সালাতে অভ্যস্ত করে গড়ে তুলতে ভুলবেন না!

এক্ষেত্রে মহান রব আল্লাহর নসিহত কতইনা সুস্পষ্ট:

وأمر أهلك بالصلاة واصطبر عليها.
[৪] সুরা লুকমান, আয়াত: ১৭।

‘আর তুমি তোমার পরিবারকে সালাতের আদেশ দাও এবং নিজেও এর ওপর অবিচল থাক!

এটি বাবা-মায়ের প্রতি মহান রবের এমন আহ্বান যে, “তোমরা নিজেদের সন্তানদের নেককার, আনুগত্যশীল ও আদর্শবান হিসেবে গড়ে তুলতে অগ্রসর হও'। আর নেককার, আনুগত্যশীল ও আদর্শবান হিসেবে গড়ে তুলতে প্রথম পদক্ষেপ হলো, সালাতের প্রতি তাদের উদ্বুদ্ধ করা। যেমন, পাঁচ ওয়াক্তের সালাত শুরুর আগে মাসজিদ থেকে মুওয়াজ্জিন মানুষদের উদ্দেশ্যে আহ্বান করে

حى على الصلاة. حي على الفلاح.

এসো সালাতের দিকে! এসো সফলতার দিকে!

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

مروا أولادكم بالصلاة وهم أبناء سبع سنين، واضربوهم عليها،

وهم أبناء عشر.

“তোমরা নিজ সন্তানদের সালাতের জন্য আদেশ করো, যখন তারা সাত বছর বয়সে উপনীত হয়। আর যখন তারা দশম বছরে উপনীত হয় তখন (সালাত আদায় না করলে) এজন্য তাদেরকে প্রহার করো।”

হে সম্মানিত বাবা! সন্মানিতা মা! আপনারা অবশ্যই সন্তানদের গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অনেক কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করে থাকেন এবং তাদেরকে কল্যাণের পথে আনতে আপনাদের অনেক বেগ পেতে হয়; কিন্তু বিশ্বাস করুন! আপনারা নিজ সন্তানদের গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যেই স্বাদ ও তৃপ্তি উপভোগ করছেন, তা দুনিয়ার সকল স্বাদ ও তৃপ্তি হতে উত্তম।

আপনারা তো সন্তানকে গড়ার উদ্যোগ নিয়েছেন, যাতে সে নেককার সন্তান হিসেবে গড়ে ওঠে। এমন সন্তান, যে আপনাদের মৃত্যুর পর আপনাদের জন্য দুআ করতে থাকবে। কিন্তু, যারা তাদের সন্তানকে শিক্ষা দিতে অবহেলা করে, যে শিক্ষা

[৫] সুরা ত্ব-হা, আয়াত: ১৩২।

[৬] সুনানু আবি দাউদ, হাদিস নং: ৪৯৫। শাইখ আলবানি একে সহিহ বলেছেন। (সহিহুল জামি: ৫৮৬৮)।

কেবলমাত্র তারই উপকারে আসবে এবং তাকে এমনিভাবেই ছেড়ে দেয়; তারা নিজেদের সন্তানের ব্যাপারে চরম ভুল করছে। আর অধিকাংশ সন্তানরা বিপথগামী হয় বাবা-মায়ের ভুলের কারণে, সন্তানদের প্রতি তাদের অবহেলার কারণে এবং দীনের ফরজ ও সুন্নাহ সম্পর্কিত শিক্ষা না দেয়ার কারণে। ফলস্বরূপ, সেই সন্তানেরা না পারে নিজেরা উপকৃত হতে, আর না পারে তারা বড়ো হয়ে তাদের বাবা-মাকে উপকৃত করতে।

আর অনেক বাবা-মা এমন রয়েছে, যারা নিজেদের সন্তানদের প্রতি নির্দয় আচরণ করে এবং তাদেরকে কষ্ট দেয়। এরপর সেসব সন্তানরাও পরবর্তীকালে বাবা-মাকে কষ্ট দেয়। তারা তখন বলে, ও আমার বাবা! আপনি তো ছোটোবেলায় আমার প্রতি ইহসান করেননি, অন্যায় আচরণ করে কষ্ট দিয়েছেন; এখন আমি বড়ো হয়েছি; তাই এবার আপনাকে সেই কষ্টগুলো ফিরিয়ে দিচ্ছি। আপনি শৈশবে আমাকে বিপথগামী করেছেন, তাই আপনার বার্ধক্যকালে তার প্রতিদান দিচ্ছি।"

সন্তানদের সালাত কায়েমের জন্য উপদেশ দেয়া বা আদেশ করা নবিগণের আদর্শ। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

واذكر في الكتاب إسماعيل إنه كان صادق الوعد وكان رسولا نبيا. وكان يأمر أهله بالصلاة والزكاة وكان عند ربه مرضيا.

“আর আপনি এই কিতাবে ইসমাইল (আ.)-কে স্মরণ করুন। নিশ্চয় তিনি ছিলেন অঙ্গীকার পূরণকারী এবং রাসুল ও নবি। তিনি তাঁর সন্তানকে সালাত ও জাকাত আদায় করার জন্য আদেশ করতেন। আর স্বীয় প্রতিপালকের কাছে ছিল তাঁর সম্মানজনক অবস্থান। *

আর সন্তানদের আদর্শ ও নৈতিকতা শিক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের জন্য সবচেয়ে বড়ো সহায়ক জিনিসটি হলো, আসমান ও জমিনের মালিক আল্লাহ তায়ালার দিকে মনোযোগী হওয়া এবং তাঁর কাছে প্রাণ খুলে সন্তানের জন্য দুআ করা। যেমন দুআ করেছিলেন সায়্যিদুনা ইবরাহিম আলাইহিস সালাম,

رب اجعلني مقيم الصلاة ومن ذريتي ربنا وتقبل دعاء.

[৭] তুহফাতুল মাওদুদ, পৃ: ২৩০। [৮] সুরা মারইয়াম, আয়াত: ৫৪-৫৫।

“হে আমার রব! আপনি আমাকে সালাত কায়েমকারী বানান এবং আমার সন্তানদের থেকেও। হে আমাদের রব!! আর আমার দুআ কবুল করুন।*

নেককার মায়েদের থেকে একজন মা বলেন—আমার ছেলে এমন ছিলো যে, কখনোই সে আল্লাহ তায়ালার কোনো বিধানের প্রতি গুরুত্ব দিত না। সারাক্ষণ খেলাধুলা ও অনর্থক কাজে লিপ্ত থাকত। আর যখন তাকে সালাতের জন্য ডাকতাম কিংবা ঘুম থেকে জাগিয়ে দিতাম, সে আমার ডাকে কোনো সাড়াই দিত না। এতে আমি খুবই পেরেশান ও হতাশ হয়ে পড়ি। এমতাবস্থায় আমি আল্লাহ তায়ালার নিকট আন্তরিক সাহায্য চাই এবং সালাত ও দুআর প্রতি যত্নবান হই। আমি শুধু দুআ কবুলের সময়গুলোর অপেক্ষায় থাকতাম। বিশেষ করে রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আমি আল্লাহর কাছে দুআ করতে থাকি; ওগো রব আমার! আপনি আমার প্রিয় সন্তানকে সালাত কায়েমকারী বানিয়ে আমার চোখের শীতলতা দান করুন। আর আমি মুনাজাতের মধ্যে বারবার সায়্যিদুনা ইবরাহিম আলাইহিস সালামের ঐ দুআটি পাঠ করতাম,

رب اجعلني مقيم الصلاة ومن ذريتي ربنا وتقبل دعاء.

‘প্রভু হে! আপনি আমাকে সালাত কায়েমকারী বানান এবং আমার সন্তানদের থেকেও। হে আমাদের প্রভু! আপনি আমার দুআ কবুল করুন।”১০

আর আমি দুআর মধ্যে নিজেকে বড়ো অসহায় ভেবে, ভীতি ও বিনম্রতার সাথে একাগ্রচিত্তে মহান আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা রেখে দুআ করতাম; বিশেষ করে যখন আমি ভাবতাম যে, আমার ছেলে তো অহংবোধ করে সালাত আদায় করা থেকে বিমুখ থাকার কারণে জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে।

আমি আমার দুঃখ ও অভিযোগ সবই মহান রব আল্লাহ তায়ালার দরবারে পেশ করতে থাকলাম। এভাবে বছর দুয়েক অতিবাহিত হয়ে গেল। এরপর হঠাৎ একদিন দেখতে পেলাম, আমার ছেলে সালাতে দাড়িয়ে আছে! সেই থেকে ছেলেকে দেখছি, সে সালাতের প্রতি এতটাই যত্নবান যে, মানুষকেও সালাতের গুরুত্ব বর্ণনা করছে!

[৯] সুরা ইবরাহিম, আয়াত: ৪০। [১০] সুরা ইবরাহিম, আয়াত: ৪০।

অতঃপর আমি আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা সহ শুকরিয়া আদায় করলাম এবং এই সত্য প্রত্যক্ষ করলাম যে, আল্লাহ তায়ালাই হলেন সর্বশ্রোতা ও সাড়া দানকারী। যিনি অসহায় মাজলুম বান্দার ডাকে সাড়া দান করেন।

ফলে আমার অভিজ্ঞতা হলো যে, অবশ্যই এর বড়ো মাধ্যম হচ্ছে দুআ, আর সে দুআর মধ্যে ইখলাস, একনিষ্ঠতা ও পূর্ণ একাগ্রতা থাকা।”

এমনই একটি দুআ হচ্ছে,

ربنا هب لنا من أزواجنا وذرياتنا قرة أعين واجعلنا للمتقين إماما.

‘হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের আমাদের চোখের শীতলতা হিসেবে দান করুন এবং আপনি আমাদের মুত্তাকিদের নেতা বানিয়ে দিন।'

[১১] তাজারিব লিল আবা ওয়াল উন্মুহাত, পৃ: ১৩। [১২] সুরা ফুরকান, আয়াত: ৭৪। Buy Hardcover : Salat Kayem Korun


Tags : bangla tutorial,bangla current affairs,rgj bangla,how to convert word to pdf bangla,pdf,word to pdf,bangla book pdf,hs bangla mcq pdf,hs bangla saq pdf,bangla word to pdf,ms word to pdf bangla,bangla question pdf,bangla pdf book download,quran shikkha bangla pdf,bangla movie,crate pdf file in bangla,bangla cartoon,how to make pdf file bangla,pdf convert bangla tutorial,bangla book pdf free download,bangla,bangla word file to pdf converter, bangla pdf book download,bangla book pdf free download,pdf,bangla book pdf,bangla,bangla tutorial,bangla current affairs,hs bengali question paper 2022 pdf download,class 11 bengali question 2022 pdf download,how to download bangla book pdf free,r s agarwal gs bangla pdf download exam guruji,r s agarwal general science bangla pdf download,how to convert word to pdf bangla,free download,how to download free pdf bangla and english book,download bangla board boi

Next Post Previous Post