মৃত্যুঞ্জয়ী : সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর - Mrittujoyer

  • বই : মৃত্যুঞ্জয়ী
  • লেখক : সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর
  • প্রকাশনী : নবপ্রকাশ
  • বিষয় : ইতিহাস ও ঐতিহ্য, ইসলামি ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  • কভার : হার্ড কভার
  • ভাষা : বাংলা

মৃত্যুঞ্জয়ী নবীজির (সা.) যুদ্ধজীবন নিয়ে লেখা আমার দ্বিতীয় গল্পভাষ্য। দুই বছর আগে প্রকাশিত ৩১৩ গ্রন্থে ইসলামের প্রথম ধর্মযুদ্ধ বদরের আদ্যোপান্ত গল্পভাষ্যে রূপদান করেছিলাম। মৃত্যুঞ্জয়ী গ্রন্থে বয়ান করা হয়েছে উহুদ যুদ্ধের মর্মস্পর্শী গল্পভাষ্য। এ যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন যেসব সাহাবি, মৃত্যু হয়েছিল ইসলামের যে সেনানীদের—এই চৌদ্দ শ বছর পরে এসেও তাঁদের নাম ও কীর্তিগাথা অমর হয়ে আছে। মৃত্যু তাঁদের নাম আর কীর্তিকে মুছে ফেলতে পারেনি সামান্য। মৃত্যুর সমাপ্তি জয় করে তাঁরা হয়ে গেছেন মৃত্যুঞ্জয়ী।

নবীজির যুদ্ধজীবন নিয়ে কেন লিখতে গেলাম, সে কথা বলতে গেলে অনেক কিছুই বলতে হবে। তবু কিছু কথা মোটাদাগে বলা উচিত বলে মনে করি। এতে এ বই লেখার উদ্দেশ্য কিছুটা হলেও পরিষ্কার হবে, আবার অনেকের মনে পুঞ্জীভূত সংশয়ের অপনোদন হবে বলে আশা করি।

হিজরত-পরবর্তী নবীজির মদিনাজীবনে পরিচালিত যুদ্ধগুলো নিয়ে আমাদের মুসলিম সমাজে নানা প্রকার ভুল ধারণার প্রসার রয়েছে। ভুল তথ্য, ভুল মানুষ, ভক্তির নামে অতিভক্তি, সত্যের জায়গায় অতিলৌকিক কল্পকাহিনি, মনগড়া বর্ণনা-এসব ছড়িয়ে আছে আমাদের বাঙালি মানসে । অথচ বিধানগত দিক দিয়ে নবীজির মদিনার জীবন অত্যন্ত শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। আর এই ভিত্তির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছিল নবীজি কর্তৃক পরিচালিত একেকটি যুদ্ধের মাধ্যমে। নবীজির যুদ্ধগুলো তাই ইসলামেরই অন্যতম ভিত্তিমূল। সুতরাং, এই ভিত্তিমূলে অসত্য, ভুল তথ্য এবং সংশয়ের অবকাশ থাকা মানে ইসলামের চেতনায় অসত্যের বীজ রোপিত হওয়া।

এটা যেমন একটা দিক; আরেকটি দিক হলো, মুসলিমদের মাঝে নবীজির জীবনীপাঠে আগ্রহের অভাব লক্ষণীয়। বিশেষত, বাংলা ভাষায় সিরাতগ্রন্থ এবং সিরাতভিত্তিক গ্রন্থের অপ্রতুলতা প্রকট। এ কথাও সত্য, সবার পাঠোপযোগী করে নবীজির জীবনও বাংলা ভাষায় সেভাবে রচিত ও অনূদিত হয়নি। একটি উপন্যাস একজন পাঠক যে আগ্রহ এবং ভালো লাগা নিয়ে পাঠ করে, নবীজির সিরাত পড়তে তার আগ্রহ সেভাবে লক্ষ করা যায় না। এটা আমাদের দৈন্য, স্বীকার করতে দ্বিধা নেই। আমরা নবীজি এবং ইসলামের ইতিহাস, সর্বোপরি ধর্মীয় বিষয়বস্তুকে সর্বসাধারণের পাঠযোগ্য ভাষায় যে উপস্থাপন করতে পারিনি, এ দাবিও অস্বীকার করার জো নেই।

সময় বদলেছে, মানুষের পাঠরুচি বদলেছে। এসব কারণে ধর্মের কথা, নবীজির জীবন, আমাদের জাগৃতির ইতিহাস মানুষের সামনে এমন অনিন্দ্য ভাষায় উপস্থাপন করা প্রয়োজন, যাতে করে মানুষ আনন্দ ও আগ্রহ নিয়ে সেগুলো পাঠ করে। কোরআনের ভাষা অভূতপূর্ব সুষমামণ্ডিত, নবীজি নিজে ছিলেন বিশুদ্ধভাষী; উপরন্তু তিনি শুদ্ধ ও সুন্দর ভাষায় কথা বলার প্রতি তাগিদ দিয়ে গেছেন। তাহলে ধর্মীয় বিষয় এবং নবীজির জীবনকে আধুনিক ও প্রাঞ্জল ভাষায় উপস্থাপন করতে আমাদের দ্বিধা কেন? কিংবা ভাষার লালিত্য দিয়ে ইসলামকে উপস্থাপন করতে আমাদের আগ্রহেরই-বা কমতি কেন?

এই প্রবণতা দূর করতেই নবীজির জীবনের নানা দিক আমাদের সমাজে অধিক চর্চা হওয়া প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যে নবীজির যুদ্ধজীবন নিয়ে গ্রন্থ রচনায় উদ্বুদ্ধ হওয়া। তবে এ প্রচেষ্টা এখানেই শেষ নয়। ইচ্ছা আছে, নবীজীবনের প্রতিটি যুদ্ধ নিয়ে ধারাবাহিক স্বতন্ত্র গ্রন্থ রচনা করার। আল্লাহর সাহায্য এবং পাঠকের ভালোবাসা পেলে সেই প্রচেষ্টা শিগগির আলোর মুখ দেখবে ইনশা আল্লাহ।

এর আগে যাঁরা আমার রচিত উম্মুল মুমিনিনদের প্রেমময় জীবনের গল্পভাষ্য প্রিয়তমা এবং ৩১৩ গ্রন্থগুলো পড়েছেন, তাঁরা আশা করি ‘গল্পভাষ্য অভিধার সঙ্গে ইতিমধ্যে পরিচিত হয়েছেন। ইতিহাস বা নবীজির জীবনকে কেবল ইতিহাসের ধারায় নয়, বর্ণনা করার চেষ্টা করা হয়েছে খানিকটা গল্পের আদলে। কেননা পাঠকমাত্রই গল্প পড়তে বা শুনতে পছন্দ করে।

গল্পভাষ্য বলে এ কথা বলার অবকাশ নেই, এই গ্রন্থে হাদিস বা সিরাতকে বাহুল্যাকারে পরিবেশন করা হয়েছে। মূলত এ গ্রন্থে শুধু ভাষাকে গল্পের রঙে রাঙানো হয়েছে, হাদিস বা সিরাতের মূলপাঠে রঙের বাহুল্য চড়ানো হয়নি। প্রতিটি ঘটনা, ইতিহাস ও তথ্য নির্মোহভাবে হাদিস ও সিরাতগ্রন্থের আলোকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করে সন্নিবেশিত হয়েছে। এ কারণে বিতর্কিত বা কিছুটা অনুসন্ধানী আলোচনার দাবি রাখে, এমন বিষয় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

আরেকটি বিষয় বিশেষভাবে লক্ষণীয়, বইয়ে মূলপাঠের মধ্যে কোনো টীকা বা সূত্র ব্যবহার করা হয়নি। আগেই উল্লেখ করেছি, এটি কোনো গবেষণা, ইতিহাস বা সিরাতগ্রন্থ নয়; নবীজীবনের ধর্মযুদ্ধের বিচ্ছুরিত আলোকচ্ছটা উৎকীর্ণ করার প্রাণান্ত চেষ্টা মাত্র। এ কারণে সচেতনভাবে টীকা সূত্র এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। সূত্র উল্লেখ করা হলে প্রতি অনুচ্ছেদে একাধিক টীকা ব্যবহারের প্রয়োজন হতো, যা গ্রন্থপাঠে বিঘ্ন সৃষ্টি করা স্বাভাবিক। আবার অনেক পাঠক এটিকে গবেষণাগ্রন্থ মনে করে পাঠাগ্রহ হারিয়ে ফেলতেন। যেহেতু গল্পভাষ্য, এ কারণে মূলপাঠে টীকা ব্যবহার না করে গ্রন্থের শেষে স্বতন্ত্র গ্রন্থসূত্র উল্লেখ করা হয়েছে। আশা করি, পাঠকমাত্রই লেখকের চিন্তাকে সুদৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করবেন।

এর পরও যদি সিরাত বা হাদিসের কোনো সূত্র, ঘটনা, কারও নাম বা ব্যক্তিপরিচয়ে কোনো ভুল বা তথ্যবিভ্রাট নজরে আসে, আমাদের জানালে আমরা তা সংশোধন করতে বদ্ধপরিকর।

সবার পাঠোদ্দীপনা কামনা করছি। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন !

-সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর ধামরাই, ঢাকা।


Tags : bangla tutorial,bangla current affairs,rgj bangla,how to convert word to pdf bangla,pdf,word to pdf,bangla book pdf,hs bangla mcq pdf,hs bangla saq pdf,bangla word to pdf,ms word to pdf bangla,bangla question pdf,bangla pdf book download,quran shikkha bangla pdf,bangla movie,crate pdf file in bangla,bangla cartoon,how to make pdf file bangla,pdf convert bangla tutorial,bangla book pdf free download,bangla,bangla word file to pdf converter, bangla pdf book download,bangla book pdf free download,pdf,bangla book pdf,bangla,bangla tutorial,bangla current affairs,hs bengali question paper 2022 pdf download,class 11 bengali question 2022 pdf download,how to download bangla book pdf free,r s agarwal gs bangla pdf download exam guruji,r s agarwal general science bangla pdf download,how to convert word to pdf bangla,free download,how to download free pdf bangla and english book,download bangla board boi

Next Post Previous Post