পিতামহ - সাব্বির জাদিদ | Pitamoho

  • বই - পিতামহ
  • লেখক - সাব্বির জাদিদ
  • প্রকাশনী - ঐতিহ্য
  • মূল্য - আটশত টাকা
  • পৃষ্ঠা সংখ্যা - ৫২৮
  • আইএসবিএন নং - 978-984-776-572-3
  • প্রাপ্তিস্থান - রুমি মার্কেট ৬৮-৬৯ প্যারিদাস রোড, বাংলাবাজার ঢাকা- ১১০০
  • প্রকাশকাল - মাঘ ১৪২৬ (ফেব্রুয়ারি ২০২০)
  • রিভিউ - তাহমিনা কাউছার রিভা

"আবদুল মোত্তালিব বললেন, আপনার সৈন্যরা আমার দুশো উট লুট করেছে। আমি উট ফেরত চাই। আবরাহা বললেন, আমি আপনাদের উপাসনালয় ধ্বংস করতে এসেছি, অথচ আপনি সামান্য উট নিয়ে চিন্তিত! কেমন নেতা আপনি! আবদুল মোত্তালিব বললেন, আমি উটের মালিক, তাই আমার চিন্তা উট নিয়ে। কাবাঘরের যিনি মালিক, তিনি তাঁর ঘর সামলাবেন।"

বই থেকে কোড করা এ কয়েকটা লাইন পড়েই নিশ্চয়ই পাঠকরা বুঝে গেছেন যে, 'পিতামহ' টা কে? জ্বি ঠিক ধরেছেন! প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাদা আবদুল মোত্তালিব'কে নিয়েই রচিত 'পিতামহ' বইটি। যার সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রায় সব মুসলমানেরই। কিন্তু রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সীরাত গ্রন্থগুলোতে উনার সম্পর্কে জানা যায় সংক্ষিপ্তকারে। 

সত্যি বলতে এ বই পড়ার আগে আমি আবদুল মোত্তালিব সম্পর্কে খুব কম জানতাম। নির্দিষ্ট কিছু কথা জানা ছিলো। অসংখ্য ধন্যবাদ লেখক সাহেবকে এমন চমৎকার বইটি লেখার জন্য। এত্ত বেশি ভালো লেগেছে বইটি! সেই ভালো লাগা থেকেই রিভিউ লেখার চেষ্টা করলাম। যদিও জানি, বইটি পড়ার পরে প্রচন্ড ভালোলাগা আর দারুণ অনুভূতির সামান্যও লেখায় প্রকাশ করতে পারবোনা। 

লেখকের কথা- বই সম্পর্কে ধারণা পেতে আমি লেখকের কথা থেকে একটু উল্লেখ করছি। উনি বলেছেন,

"পাঠক, এখন যে বইটি আপনার হাতে, তার নাম ইতিমধ্যে জেনে গেছেন-পিতামহ। এটা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাদা ও জাহেলি যুগের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর চরিত্র আবদুল মোত্তালিবের জীবনাশ্রিত উপন্যাস।

পিতামহ উপন্যাসে শুধু যে আবদুল মোত্তালিবের জীবনী এসেছে এমন নয়, বরং ইয়েমেনে আবরাহার প্রতিষ্ঠা লাভ, তার শাসন, জাহিলি আরবের জীবন, গোত্রীয় সংঘাত, প্রেম, ধর্মচর্চা, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়ও সমান গুরুত্ব পেয়েছে। 

বলে রাখা ভালো, পিতামহ কোন ইতিহাসগ্রন্থ নয় বরং ইতিহাসকে আশ্রয় করে লেখা উপন্যাস। এখানে জ্ঞাতসারে ঐতিহাসিক সত্যকে বিকৃত করা হয়নি তবে ইতিহাসের নীরবতার গোড়ায় কল্পনার জল ঢেলে সুখপাঠ্য আখ্যানের রূপ দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।"

বই থেকে- 'পিতামহ' নিয়ে রচিত হলেও বইটি শুরু হয়েছে সম্পূর্ণ অন্যরকমভাবে। লেখক 'মক্কা পর্ব' এবং 'ইয়েমেন পর্ব' নামে দুটি ভাগে চমৎকার সব শিরোনাম দিয়ে জাহেলি যুগের ঐতিহাসিক ঘটনাবহুল এ বিশাল  উপন্যাসটি রচনা করেছেন। জাহেলি যুগের পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং ধর্মের যে করুণ অবস্থা ছিলো তার অধিকাংশই বইয়ের কাহিনীতে উঠে এসেছে।

পিতামহ আবদুল মোত্তালিব মূল চরিত্র হলেও উপন্যাসের সৌন্দর্য আর আকর্ষণ বেড়েছে পুরো বইতে একজন 'নায়ক'-কে ঘিরে সম্পূর্ণ কাহিনী আবর্তিত হওয়ায়। এমন সব ঘটনা, চরিত্র, মানুষের নাম জানা হলো যেগুলো বা যাদের সম্পর্কে জানার অনেক আগ্রহ থাকে। এমনিতে কোন বইয়ে কখনোই পেতাম না হয়তো এসব জবাব। এরমধ্যে একটা নাম হলো 'হযরত বেলাল রা.। উনার আগমনি বার্তা এবং উনার মা-বাবা সম্পর্কে বইতে চমৎকারভাবে জানানো হয়েছে।

কিছু ঘটনা জানা হলো যা একদমই নতুন। যেমন, আবদুল মোত্তলিব কখনো মদপান করেননি! উনাদের ঘরে মদ রাখাও হতোনা। এবং উনার ছেলের নাম রাখেন 'আবদুল্লাহ! যা তাদের যুগে কারো নাম রাখা হয়নি। সেই 'আবদুল্লাহ'র সন্তান হিসেবেই রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর আগমন। আল্লাহপাক জাহেলি যুগের মানুষদের মধ্যে প্রিয় হাবিবকে আনার আগেই তাঁর পরিবারকে সেভাবেই তৈরি করেছেন।

আবদুল মোত্তালিব- এর আসল নাম কিন্তু শাইবা। উনার নাম পরিবর্তনের ঘটনাটি দারুণ চমকৃত। শাইবা মানে যার চুল সাদা রঙের। জন্মের সময়ে আবদুল মোত্তালিব সাদা চুল নিয়ে জন্ম গ্রহণ করেন। তখন উনার মা উনার নাম রাখেন শাইবা। উনার মায়ের পরিচয়ের অংশটা আরো বেশি দারুণ। তখনকার সময়ের একজন ধনী পরিবারের ক্ষমতাসীন আর রাগী মেয়ে ছিলেন তিনি।

আবদুল মোত্তালিব এর একটা ছেলে সন্তানের পরে সবগুলো ছিলেন মেয়ে। তখন তিনি মানত করেন, যদি উনার দশটা ছেলে হয় একজনকে কোরবানি দিবেন। আর, সত্যিই তিনি একে একে দশটা ছেলের বাবা হন। মানত পূরণের সেই কোরবানির জন্য লটারিতে নাম উঠে উনার সবচেয়ে প্রিয় পুত্র আবদুল্লাহ'র। 

ইয়েমেনে কিভাবে আবরাহার রাজত্ব গড়ে উঠে তার বর্ণনা সুন্দর একটা কাহিনীর মধ্য দিয়ে বর্ণিত হয়েছে। আবদুল মোত্তালিবের সাথে আবরাহার প্রথম দেখার ঘটনা এবং আবরাহার উপহার দেয়া মেহেদী গাছের পাতা দিয়েই একসময় আবদুল মোত্তালিব নিজের চুল লাল রঙ করেন।

মার মন্তব্য- বইটি পড়তে গিয়ে কখনও কখনও চোখে পানি চলে এসেছে। এ বিশাল বই আমি রোযার মধ্যে অল্প অল্প করে পড়েছি ৭/৮ দিনে। এত বেশি ভালো লেগেছে বইটি পড়তে তা আসলে বর্ণনার বাইরে।

 ইতিহাস সবসময়ই একটু গম্ভীর আর বিরক্তিকর আমার কাছে। কিন্তু ইতিহাসকে এমন কাহিনীকারে লিখলে যে তা এত আকর্ষণীয় হবে তা কে জানতো! বই পড়া যখন শেষের দিকে, তখন আমার মধ্যে একধরণের অস্থিরতা দেখা দিলো! মনে হলো এ বই এত তাড়াতাড়ি শেষ  হওয়া ঠিক না। শেষ করার পর মনে হলো বইটি কেন আরো বড় পরিসরে লিখেননি লেখক! 'পিতামহ' সম্পর্কে আরো জানার তৃষ্ণা থেকে গেলো। 'পিতামহ' যখন পিতামহ হয়েছেন এরপর কি কি হয়েছে! যদি জানতে পারতাম! জানতে পারতাম যদি 'তালহা' আর 'সাফিয়া'র বাকি কাহিনী।



Tags : bangla tutorial,bangla current affairs,rgj bangla,how to convert word to pdf bangla,pdf,word to pdf,bangla book pdf,hs bangla mcq pdf,hs bangla saq pdf,bangla word to pdf,ms word to pdf bangla,bangla question pdf,bangla pdf book download,quran shikkha bangla pdf,bangla movie,crate pdf file in bangla,bangla cartoon,how to make pdf file bangla,pdf convert bangla tutorial,bangla book pdf free download,bangla,bangla word file to pdf converter, bangla pdf book download,bangla book pdf free download,pdf,bangla book pdf,bangla,bangla tutorial,bangla current affairs,hs bengali question paper 2022 pdf download,class 11 bengali question 2022 pdf download,how to download bangla book pdf free,r s agarwal gs bangla pdf download exam guruji,r s agarwal general science bangla pdf download,how to convert word to pdf bangla,free download,how to download free pdf bangla and english book,download bangla board boi

Next Post Previous Post