ইন্টারেস্টিং একটা বিষয় শেয়ার করি। অল্টারনেট হিস্ট্রিকাল থ্রিলার জনরার একটা বই নিয়ে কাজ করছি, যেখানে ব্রিটিশরা ৪৭ এ উপমহাদেশ ছাড়ে নাই। ফলে পুরো টাইমলাইনটাই বদলে গেছে এই গল্পে। তো এই টাইমলাইনে যে বিদ্রোহ গুলো হয়েছে তার ইতিহাস।
১২
বিদ্রোহকথা
রবিন হলে ফিরতে ফিরতে বাংলা অঙ্গরাজ্যের বিদ্রোহের কথা ভাবতে থাকে। এ বিষয়ে সে খুব বেশি জানে না। আর দশটা সাধারণ মানুষ যা জানে সেটুকুই জানে। এ বিষয়ে জানার চেষ্টাও করেনি কখনও। তবে তার বাবার আনা বিদ্রোহ সম্পর্কিত একটি বইয়ে কিছু তথ্য জেনেছিল। সেগুলোর কিছু মনে করার চেষ্টা করে সে।
এই সমগ্র উপমহাদেশে অসংখ্য বার অসংখ্য জায়গায়-ই বিদ্রোহ হয়েছে। জলাশয়ে লালন করা মাছেরা যেমন সকালে ভেসে উঠে তেমনি বার বার বাংলা সহ সমগ্র উপমহাদেশে বিদ্রোহ জেগে উঠেছে। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর বাংলার বিদ্রোহ নিয়ে ভাবলে যে জিনিসগুলো মনে আসে তা হলো উনিশশো একষট্টি সালের বরিশালের কৃষক বিদ্রোহ। একষট্টিতে হঠাৎ করেই কৃষকদের সাথে তৎকালীন এক ব্রিটিশ পুলিশ অফিসারের সাথে কিছু একটা নিয়ে ঝামেলা বেধে যায়। সেই পুলিশ অফিসার ভরদুপুরে সবার সামনে ওই কৃষককে গুলি করে হত্যা করে। এই ঘটনায় তৎকালিন সমস্ত কৃষক ক্ষেপে যায়। সাথে সাথেই স্থানীয় থানায় আগুন দিয়ে বিদ্রোহ ঘোষনা করে বসে। বিদ্রোহের সেই আগুন ধীরে ধীরে সমস্ত বরিশালে ছড়িয়ে যায়। সেই বিদ্রোহ মুহুর্তেই “ব্রিটিশ তুই বরিশাল ছাড়” আন্দোলনে রুপ নেয়। আর সাথে সাথে পুরো বাংলায় দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে কৃষকদের এই বিদ্রোহ। তিনমাস চলেছিল বিদ্রোহ। ব্রিটিশরা খুব বুদ্ধিমত্তার সাথে হ্যান্ডেল করে বিষয়টা। তারা সরকারের মাধ্যমে তাদের বেশিরভাগ দাবী দাওয়া পূরণ সহ আরও অনেক সুবিধা ঘোষনা করে। এমনকি তারা ওই পুলিশ অফিসারকে বিচারের আওতায় ও আনে। এরপরে ধীরে ধীরে মিইয়ে গেছে বরিশালের কৃষক বিদ্রোহ। এরপরে পুলিশের নিম্ন পর্যায়ের প্রায় সবাইকেই বাঙালি দেখে নেয়া হয় কারণ একজন বাঙালির সাথে দ্বন্দ্বকে যেভাবে দেখে মানুষ, একজন সাদা চামড়ার মানুষের সাথে হলে সেভাবে দেখে না। একই কাজ হয় অন্য সরকারি চাকরির বেলায়ও। একদম বড় পোস্ট ব্যতীত সাদা চামড়ার কাউকে খুব কমই নিয়োগ দেয়া হয়।
একষট্টির পরে দীর্ঘসময় শান্ত সমুদ্রের মতো নীরব ছিল বাংলা। এরপর উনআশিতে কলকাতা থেকে নতুন করে জেগে উঠে বিদ্রোহ। এই বিদ্রোহ ইতিহাসের পাতায় কলকাতা বিদ্রোহ নামে পরিচিত। এই বিদ্রোহ এতটাও গুরুত্ব পায়নি। কারণ হিসেবে খুঁজলে দেখা যায় ওখানের হিন্দু মুসলিমরা নিজের মধ্যে দ্বন্দ্ব লেগে যায় আর বিদ্রোহ ঝিমিয়ে পড়ে। এরপর বিরাশি, সাতাশি কোনটাই এত বেশি শক্তিশালী ছিল না। কিছু ছোট বিষয়কে কেন্দ্র করে আন্দোলন মাত্র।
কিন্তু বিরানব্বই মির্জা গালিবের স্বাধীনতার সংগ্রাম পুরো দেশকে ফুটন্ত পানির মতো উত্তপ্ত করে ফেলে। এই আন্দোলন পুরো বাংলা আর কলকাতাকে ভূমিকম্পের মতো কাঁপিয়ে দেয়। মির্জা গালিব একটা দারুন কাজ করেন সেটা হলো, বাংলা অঙ্গরাজ্যকে লক্ষ্য না করে পুরো উপমহাদেশের সমস্ত মানুষের প্রতি জাত-ধর্ম ভেদাভেদ বাদ দিয়ে মাতৃভূমির মুক্তি চেয়ে দারুন এক বক্তৃতা প্রদান করেন। তার সেই বক্তৃতা পুরো উপমহাদেশে কাগজ, রেকর্ড যতভাবে সম্ভব ছড়িয়ে যায়। দেশ জুড়ে এই বিদ্রোহ যুদ্ধে রুপ নেয়। একই সাথে মির্জা গালিবের সমর্থনে নেমে আসে উপমহাদেশের সবগুলো বিদ্রোহী দল। তারা মির্জা গালিবকে ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক ঘোষনা করে তার আদেশ মেনে নিয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে যায়। সে এক বিরাট অবস্থা। দেশ জুড়ে সাত মাসের কারফিউ ছিল। যুদ্ধ চলেছে তেরো মাস। পুরো উপমহাদেশে কম করে হলেও আশি হাজার বিদ্রোহীকে যুদ্ধ এবং যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ফাসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পুরো দেশে মির্জা গালিব এক আদর্শের নাম হয়ে গিয়েছিল। মন্দির-মসজিদ-গীর্জা সব জায়গায় মানুষ মির্জা গালিবের জন্য প্রার্থনা শুরু করে। পুরো উপমহাদেশের স্বাধীনতার জন্য স্বপ্ন দেখা সব মানুষ নিশ্চিত ছিল যে, মির্জা গালিব তাদের স্বাধীনতা উপহার দিবেনই। কিন্তু মির্জা গালিব সাধারণ কোনো যুদ্ধে জড়ায়নি। জড়িয়েছে পৃথিবীর সবচাইতে বড় শক্তি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক ভাবে প্রায় কোনো দেশ-ই মির্জা গালিবের পক্ষে সমর্থন দিয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার সাহস করেনি। ফলে ব্রিটিশরা এবার নড়ে চড়ে বসে। প্রথম ছ'মাস মির্জা গালিবের উত্থান দেখে। কিন্তু এরপর-ই খেলা বদলে যায়। ইংল্যান্ড থেকে শয়ে শয়ে বিমান আসতে শুরু করে। সারাদেশে পাখির ঝাকের মতো হ্যালিকপ্টার পৌছে যায়। সমুদ্র সীমায় চলে আসে শক্তিশালী ব্রিটিশ নৌবহর। এমন অবস্থায় ধর্মীয় কিছু নেতা যুদ্ধ থেকে সরে যায়। সরে যেতে শুরু করে সাধারণ মানুষও, কারণ চারিদিকে শুরু হয়েছিল অর্থনৈতিক মন্দা। পেটের ক্ষুধার চাইতে স্বাধীনতা সংগ্রাম বড় মনে হয়নি মানুষের কাছে। অন্তত ব্রিটিশরা থাকতে তাদের না খেয়ে মরতে হয়নি। এই বিষয়টাকে গুরুত্ব দিয়ে ব্রিটিশরা সাধারণ মানুষকে বোঝাতে সংবাদ মাধ্যমে গুলো ব্যবহার করে। তারা বলে, এই যুদ্ধ চলতে থাকলে এক-তৃতীয়াংশ সাধারণ মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। এর ফলে মানুষ বিশ্বাস হারাতে শুরু করে। আর সেই সাথে মির্জা গালিবের পতন শুরু হয়ে। ধীরে ধীরে তার নিয়ন্ত্রিত এলাকা তার আওতা থেকে বের হতে শুরু করে। অবশেষে উনিশশো তিরানব্বুই সালের দশই মার্চ ফরিদপুরের ভাঙ্গাতে হঠাৎ করেই চারিদিক থেকে মির্জাকে ঘিরে ফেলে ব্রিটিশ বাহিনী। দীর্ঘ সাতদিনের এক যুদ্ধের পর মারা যায় মির্জা গালিব আর সেই সাথে উপমহাদেশের বাকি
জায়গাগুলোর আন্দোলন কারীরা নিজেদের উপর বিশ্বাস হারাতে শুরু করে। উপযুক্ত নেতৃত্ব্যের অভাবে শেষ হয়ে যায় বাংলা তথা উপমহাদেশের শেষ মুক্তির আন্দোলন “মির্জা গালিবের স্বাধীনতার সংগ্রাম।”
Tags : bangla tutorial,bangla current affairs,rgj bangla,how to convert word to pdf bangla,pdf,word to pdf,bangla book pdf,hs bangla mcq pdf,hs bangla saq pdf,bangla word to pdf,ms word to pdf bangla,bangla question pdf,bangla pdf book download,quran shikkha bangla pdf,bangla movie,crate pdf file in bangla,bangla cartoon,how to make pdf file bangla,pdf convert bangla tutorial,bangla book pdf free download,bangla,bangla word file to pdf converter, bangla pdf book download,bangla book pdf free download,pdf,bangla book pdf,bangla,bangla tutorial,bangla current affairs,hs bengali question paper 2022 pdf download,class 11 bengali question 2022 pdf download,how to download bangla book pdf free,r s agarwal gs bangla pdf download exam guruji,r s agarwal general science bangla pdf download,how to convert word to pdf bangla,free download,how to download free pdf bangla and english book,download bangla board boi